গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসনের মধ্যেই এবার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে পশ্চিম তীর। শুক্রবার (১৪ মে) গাজায় ইসরাইলি নৃশংসতার প্রতিবাদে পশ্চিম তীরের হেব্রনে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলি নিরপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইসরাইলি বাহিনী গুলি, স্টান গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করলে ঘটনাস্থলেই হতাহত হন বহু ফিলিস্তিনি। চলে ধরপাকড়। জবাবে ইট-পাটকেল ছুড়ে এবং রাস্তায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীরা। সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিম তীরের বেথেলহেম এবং জেরিকো শহরেও।
এরমধ্যেই হামাসের রকেট হামলার জবাবে গাজায় বিমান হামলা আরও জোরদার করেছে ইসরাইলি বাহিনী। শুক্রবার (১৪ মে) দিনভর ওই অভিযানে অংশ নেয় দেড় শতাধিক জঙ্গিবিমান। এসময় গাজার বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি লক্ষ্য করে দফায় দফায় বোমাবর্ষণ করা হয়। এতে অন্তত ১১ ফিলিস্তিনি নিহত হন। আহত হন নারী ও শিশুসহ ৫০০ জন। ক্ষতিগ্রস্ত হয় বহু ভবন ও স্থাপনা। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় চারপাশ।
বিমান হামলার পাশাপাশি গাজা সীমান্তে ফিলিস্তিনিদের অবস্থানে ট্যাংক এবং আর্টিলারির মাধ্যমে গোলাবর্ষণও অব্যাহত রেখেছে ইসরাইলি সেনা বাহিনী। হামাসের রকেট হামলার জবাব দিতেই বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব।
এদিকে সংকট নিরসনে দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। শুক্রবার, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মুখপাত্র আরও বলেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত পুরো পরিস্থিতিকে মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
স্টিফেন ডুজারিক বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব যতদ্রুত সম্ভব উভয়পক্ষকে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। চলমান সংঘাত অঞ্চলটিতে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় ডেকে নিয়ে এসেছে। আর তাই উভয়পক্ষের উচিত মানবিক স্বার্থে যুদ্ধ বন্ধে সমঝোতার চেষ্টা করা। এ লক্ষ্যে জাতিসংঘ সবধরনের সহায়তার জন্য প্রস্তুত।
গাজায় চলমান সংঘাতে এরইমধ্যে প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। এছাড়া ইসরাইলি বিমান হামলার হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন বলেও জানানো হয়।
Leave a Reply