বাচ্চা প্রসবের জন্য যাচ্ছিল গ্রামের বাড়ি স্বজনের কাছে কিন্তু পদ্মার চরে প্রসূতি জন্ম দিলেন নবজাতককে। নাম রাখা হয়েছে মারিয়ম আক্তার পদ্মা।
রোববার শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মার পাইনপাড়া চরে নবজাতক শিশুটি প্রসব করেন প্রসূতি মা। সন্ধ্যা ৬টার কিছু পড়ে ঠিক ইফতারের আগ মূহুর্তে চর থেকে প্রসূতি মা আর নবজাতক শিশুকে উদ্ধার করে জাজিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন জাজিরা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা। মা ও শিশু উভয়ই সুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
জানা যায়, বরিশালের হিজলা উপজেলা পূর্ব শ্রীপুর গ্রামের মো. নাহিদের সাথে বরগুনার আমতলী গ্রামের সুমা আক্তারের বিয়ে হয় দেড় বছর আগে। বিয়ের পরে জীবন জীবিকার তাগিদে ঢাকায় চলে আসেন নব-দম্পতি। পুরান ঢাকার লালবাগের একটি ছোট ভাড়া বাসায় থাকেন তারা। নাহিদ কাজ করেন একটি স্টিলের কারখানায়। বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ ছিল চলতি মাসের ১১ তারিখ। ছোটো ভাড়া বাসায় শুধু দুজনেই থাকতেন তারা। তাই স্বজনের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে।
সুমার স্বামী মো. নাহিদ জানান, আগেই যাওয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু টাকার অভাবে যেতে পারেননি, ছুটিও ছিল না। এখন টাকা হাতে এসেছে তাই বরগুনা যাচ্ছিলেন। তারা যখন বাসা থেকে বের হয়েছেন তখন ফেরি চলছিলো। কিন্তু মাওয়া এসে দেখেন সব বন্ধ। পরে অন্যদিক দিয়ে পার হতে ট্রলারে ওঠেন। ট্রলার চালক জাজিরার মাঝিরঘাটে না নামিয়ে চরে নামিয়ে দেয়।
পরে তারা হাটা শুরু করেন, কিছুক্ষণ পরেই তার স্ত্রী সুমার ব্যথা শুরু হয়। কিন্তু আশেপাশে কোনও বাড়ি পায়নি তারা। দুই ঘণ্টা হাঁটার পর বাড়ি লাগাম পান। তখন একটি বাড়িতে তারা আশ্রয় নেয় এবং ওই বাড়িতেই একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয় সুমা। পরে সরকারি লোকজন হাসপাতালে নিয়া যায় তাদের।
জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, সাড়ে ৭টার দিকে প্রসূতি ও তার নবজাতককে হাসপাতালে আনা হয়েছে। মায়ের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছে তবে চিকিৎসা চলছে। বর্তমানে মা ও নবজাতক উভয়ই সুস্থ আছেন।
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, ঘটনাটি শোনার সাথে সাথে চর থেকে প্রসূতি মা ও শিশুকে উদ্ধারে নৌ এ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছি। পদ্মা পার হওয়ার পর ঘাট থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে আনা হয়েছে। এরপর জাজিরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ওই কন্যা শিশুটির ডাক নাম দিয়েছেন পদ্মা। আমাদের সার্বিক তত্বাবধানে রয়েছেন মা ও নবজাতক।
Leave a Reply