উইমেন ডেস্ক : কন্ঠশিল্পী মামুন নদীয়া। প্রয়াত কন্ঠশিল্পী কুষ্টিয়ার গর্ব মুক্তার হোসেন মামুন (মামুন নদীয়া)। তিনি ছিলেন এ প্রজন্মের একজন জনপ্রিয় বাউল কণ্ঠশিল্পী। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুরের বাসিন্দা তাহাজ্জত আলী ওরফে খোকা মিয়ার ছেলে। ১৯৬৪ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন।
তার গানের ছিল হাজারো ভক্ত। এখনও তার গান শ্রোতাদের কন্ঠে বেজে ওঠে মধুর সুরে। মেরিনা তুই আমায় কাদালি, আমি এক পতিতার প্রেমী, যারা ঘর ভাঙ্গা নারী, সারাটি জীবন দুঃখ হলো মোর সাথী সহ প্রায় শতাধিক গানের সুরকার ও গীতিকার তিনি নিজেই। গানের পাশাপাশি চিত্র শিল্পী হিসেবেও তিনি বেশ জনপ্রিয় ছিলেন।
তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে বাউল সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় ১১তম স্থান অধিকার করে ছিলেন। অল্প বয়সেই ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে পরলোক গমন করেন এই ক্ষণজন্মা। তিনি ২০০৭ ইং সালের ৩১শে মে ইন্তেকাল করেন।
বাউল সম্রাট লালনের তীর্থ ভূমি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের বাজারের পাশেই দরবেশ রেজন শাঁহ’য়ের মাজারে গুরু রেজন শাঁহ’র অন্যতম অনুসারী কন্ঠ শিল্পী মামুন নদীয়া চিরশায়িত হোন।
মামুন নদীয়া ছিলেন বাংলারই এক নিভৃতচারী বাউল। সর্বদা ধবল রঙের গেরুয়া পড়তেন। চশমা পরিহিত মুখটি ছিল শ্যামল নিষ্পাপ। কথাবার্তার ভঙ্গিটি অত্যন্ত বিনীত। বড় নিঃশব্দে। তাঁর চলে যাওয়ার সময় দেশজুড়ে তেমন আলোরণ ওঠেনি। তিনি তো আর জাগতিক অর্থে ‘ধনী’ এবং ‘বিশিষ্ট’ ব্যক্তি ছিলেন না।
মিডিয়া কখনও তাঁর পিছন পিছন দৌড়ায়নি, তাঁর খোঁজখবরও রাখেনি। তবে তাঁর স্বল্পকালীন জীবনটি পরিপূর্ণভাবে সার্থক হয়ে উঠেছিল। কেননা, জীবদ্দশায় তাঁর পরমের বোধ হয়েছিল।
প্রতিবছরই ১৭ই জৈষ্ঠ মরমী গায়ক মামুন নদীয়ার ভালবাসায় দূরদূরান্ত থেকে রেজন শাহ মাজারে মামুন নদীয়ার সমাধিস্থলের পাশেই চলে সাধুদের মিলন মেলা। দরবেশ রেজন শাহ মাজার কমিটির উদ্যোগে এই আয়োজন করা হয়। সাধুদের সম্মানে আয়োজন করা হয় সাধু সেবা।
কিন্তু এই গুণী ব্যক্তির স্মৃতি সংরক্ষণে নেই কোন উদ্যোগ। তাই মামুন নদীয়ার ভক্ত ও শুভকাঙ্খীদের দাবি মরমী গায়ক মামুন নদীয়ার স্মৃতি রক্ষার পাশাপাশি মামুন নদীয়া একাডেমি করা হোক, মামুন নদীয়ার গানগুলো সংরক্ষনের উদ্দ্যোগ নেওয়া, স্মৃতি রক্ষায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবী করেন।
Leave a Reply