উইমেন ডেস্ক : বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উদযাপনে প্রস্তুত কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার শিলাইদহ কুঠিবাড়ি।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত কুষ্টিয়ার শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে প্রায় ৪ বছর পর জাতীয়ভাবে উদযাপিত হতে যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উৎসব। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়। প্রতিবারের মতো এবারও কুঠিবাড়ির আঙিনায় বাঁশ-কাঠ-ত্রিপল দিয়ে সাজানো হয়েছে মঞ্চ ও দর্শনার্থীদের বসার স্থান। রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে রং-তুলির আঁচড়, ব্যবহৃত জিনিসপত্রকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও শেষ হয়েছে। জন্মজয়ন্তী কেন্দ্র করে কুঠিবাড়ির পাশেই তিন দিনব্যাপী গ্রামীণ মেলারও আয়োজন করা হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরাও সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, রোববার (৮ মে) বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্বকবির ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
আরও উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। এছাড়া এবারের রবীন্দ্রনাথ জয়ন্তী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করবেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দাদা প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ১৮০৭ সালে এই অঞ্চলের জমিদারি পান। পরবর্তী সময়ে ১৮৮৯ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শিলাইদহে জমিদার হয়ে আসেন। শিলাইদহে তিনি ১৯০১ সাল পর্যন্ত জমিদারি পরিচালনা করেন। এখানে অবস্থানকালে তিনি রচনা করে তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালীসহ আরও বিভিন্ন গ্রন্থ।
রবীন্দ্রনাথ শিলাইদহে বসেই গীতাঞ্জলী কাব্য গ্রন্থের অনুবাদের কাজ শুরু করেন। পরে ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলী গ্রন্থের অনুবাদে সাহিত্যে প্রথম নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। এখানে বসে রচনা করা বিশ্বকবির অসংখ্য গান, কবিতা ও সাহিত্যকর্ম বাঙলা সাহিত্যকে করেছে সমৃদ্ধ। তাই রবীন্দ্র সাহিত্যে শিলাইদহের গুরুত্ব অন্যতম।
এবছর স্থায়ীভাবে নির্মিত মঞ্চে চলবে কবিগুরুর সাহিত্য ও শিল্পজীবন নিয়ে আলোচনা, গান ও কবিতা। এখানে এসে কবিগুরুর শিল্প ও সাহিত্যকর্ম ব্যক্তিজীবনে অনুপ্রেরণা যোগায় এমনটায় মনে করেন রবীন্দ্র ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।
বৈশাখের ঝড়-বৃষ্টিতে উৎসবের আয়োজন যাতে বিফলে না যায় তাই অক্লান্ত পরিশ্রম করছে নির্মাণ শ্রমিকেরা। পাশাপাশি আয়োজনের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন বলে জানিয়েছেন তারা।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবার জাতীয়ভাবে উদযাপিত হতে যাচ্ছে রবীন্দ্র জয়ন্তী। সে আয়োজনকে সফল করতে প্রতœতত্ত্ব বিভাগ সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে।
এব্যাপারে শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মুখলেছুর রহমান ভূঁইয়া জানান, বিশ্বকবির ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় এবং জেলা প্রশানের উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মতো শিলাইদহ কুঠি-বাড়িতে জাতীয়ভাবে অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। এই বিষয়টা সামনে রেখে শিলাইদহ কুঠি-বাড়ির পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাসহ যে সকল কাজ আছে সেগুলো শেষ পর্যায়ে রয়েছে। নিদিষ্ট সময়ের মধ্যেই সকল কাজ শেষ হয়ে যাবে।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬১তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলার বাহিনী তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। অনুষ্ঠান এলাকায় তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠান এলাকায় ডিবি টিম থাকবে ও সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে, এছাড়াও পোশাকি পুলিশও থাকবে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
Leave a Reply