উইমেন ডেস্ক:ফকির লালন শাহের গানে গানে মুখরিত কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ি। লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে লালন শাহের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড়ঘেঁষে বসেছে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীদের খণ্ডখণ্ড গানের আসর। দিনরাত গান ছাড়াও তারা লালন ফকিরের বাণী নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অনেকে আবার লালনের মত ও পথের দীক্ষা নিচ্ছেন। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়াজনে তিন দিনব্যাপী এ লালন স্মরণোৎসব শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ)। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে হাজারো বাউল ভক্ত এসেছেন লালন আখড়াবাড়িতে।
এবারের লালন মেলার প্রতিপাদ্য বিষয় ফকির লালন শাহের অমর বাণী ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে দূরদূরান্ত থেকে এসেছেন ভক্ত-অনুসারীরা। তারা খণ্ডখণ্ডভাবে দলবদ্ধ হয়ে লালন ফকিরের গান গাইছেন। লালনের বাণী ও আদর্শ নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। লালনের গানে গানে মুখরিত পুরো মেলা। তারা লালন ফকিরের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড়ঘেঁষে অস্থায়ীভাবে তৈরি করেছেন আস্তানা। লালন স্মরণোৎসবে কালি নদীর পাড়ে মাঠে বসেছে গ্রামীণ মেলা। আশপাশের এলাকায়ও হরেক রকম পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
লালন ভক্ত ও অনুসারীরা জানান, লালন শাহের জীবদ্দশায় চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহে পূর্ণিমার রাতে দোল পূর্ণিমার উৎসব পালন করা হতো। সেই থেকে লালন ভক্তরা প্রতি বছরই নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত এ উৎসব পালন করেন। সাঁইজির স্মরণে দিবসটি ঘিরে তিন দিনের অনুষ্ঠান হয় আখড়াবাড়িতে। লালন ফকিরের গানে গানে এখন পুরো এলাকা মুখরিত।
লালন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বলেন, লালন মেলায় এসে খুবই ভালো লাগছে। লালন ভক্ত ও অনুসারীদের আস্তানাগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। তাদের গাওয়া গান শুনতে জড়ো হচ্ছেন অনেকে।
উল্লেখ্য, ফকির লালন শাহ জীবদ্দশায় দোল পূর্ণিমার রাতে শিষ্যদের নিয়ে সাধুসঙ্গে বসতেন। তারই ধারাবাহিকতায় সাঁইজির তিরোধানের এতো বছর পরও কালি নদীর ধারে প্রতি বছর দিবসটি ঘিরে পালিত হয়ে আসছে এ উৎসব। দোল পূর্ণিমার রাতে প্রতিবছর আড়ম্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে লালন স্মরণোৎসব পালন করা হয়।
কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই বছর স্থগিত ছিল লালন স্মরণোৎসবের সব আয়োজন।
Leave a Reply