উইমেন ডেস্ক: শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ৩ আশ্বিন ১৪২৮ |
মাদারীপুর জেলার শিবচরে অপহরণের দুই দিন পর নির্মানাধীন একটি টয়লেটের মধ্যে থেকে কুতুবউদ্দিন নামের দুই বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় নিহত শিশুর চাচী নার্গিস আক্তার (৩৫) ও চাচাতো বোন হাফসাকে(১৪) আটক করেছে শিবচর থানা পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত ভোর রাতে জাজিরা উপজেলার নাওডোবা এলাকার একটি নির্মাণাধীন টয়লেটের নিচ থেকে মাটি চাপা দেওয়া ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগে গত বুধবার(১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে শিশুটি নিঁখোজ হয়। শিশু কুতুবউদ্দিন শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজার ঘাট সংলগ্ন বাগিয়া গ্রামের ইসমাইল বেপারী ছেলে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আটককৃত শিশুটির চাচী নার্গিস আক্তারের স্বামী আবুল হোসেন বেপারী গত কয়েক বছর আগে মারা গেলে নার্গিস আক্তার এক ছেলে ও মেয়ে হাফসাকে নিয়ে বাবার বাড়ি শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা গ্রামে বসবাস করতে থাকেন। গত কয়েকদিন আগে স্বামীর বাড়ির জায়গা-জমি ভাগ-বন্টন নিয়ে নার্গিসের সাথে দেবর-ভাশুরদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এদিকে গত বুধবার সকালে নার্গিস আক্তারের মেয়ে হাফসা চাচাতো ভাই শিশু কুতুবউদ্দিনকে চকলেট কেনার কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
এরপর থেকেই শিশুটিকে খুঁজে পাচ্ছিল না তার পরিবার। পরে ওই দিন বিকেলেই বাবা ইসমাইল বেপারী শিবচর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে শিবচর থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার বিকেলে নার্গিস আক্তার ও তার কন্যা হাফসাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাওডোবা এলাকায় একটি নির্মানাধীন টয়লেটের মধ্যে থেকে কুতুবউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত কুতুবউদ্দিনের চাচা মুছা বেপারী বলেন, আমার ভাই (আবুল হোসেন) মারা যাওয়ার পরে আমরা ভাইয়ের বউ বাচ্চাদের খোঁজ খবর রাখি। টাকা পয়সাও দেই। কিন্তু জায়গা-জমি নিয়ে একটু দ্বন্দ্বের কারণে তারা আমার ভাতিজাকে খুন করেছে। তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।
শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমির হোসেন সেরনিয়াবাত জানান, ঘটনার পরে শিশুটির বাবা
অভিযোগ করলে আমরা শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ শুরু করি। বৃহস্পতিবার বিকেলে সন্দেহজনক ভাবে ওই দুইজনকে আটক করলে হত্যাকান্ডের বিষয়টি উঠে আসে। তাদের দেওয়া তথ্যর ভিত্তিতে শরিয়তপুরের নাওডোবা এলাকার একটি টয়লেটের মধ্যে মাটির নিচে পুঁতে রাখা শিশুর মরদেহ উদ্ধার করি। মরদেহটি ময়না তদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। এ ব্যপারে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
শিবচর থানার ওসি মোঃ মিরাজ হোসেন বলেন, নার্গিস মূলত তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য তার শশুর বাড়ির লোকদের উপর ক্ষিপ্ত। সে তার মেয়েকে দিয়ে শিশুটিকে খুব কৌশলে আনে। আমাদের ধারনা সে ও তার মেয়ে দুজনে মিলে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। নার্গিস নিজেই দেখিয়েছে লাশের অবস্থান।
Leave a Reply