ঢাকায় হওয়া ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবের বেশির ভাগ মামলারই চার্জশিট প্রস্তুত। খুব শিগগিরই জমা দেয়া হবে আদালতে। মামুনুল হকসহ সংগঠনটির দুই ডজনেরও বেশি নেতা ধরা পড়ায় তদন্ত এগোচ্ছে জোরেশোরে।
পুলিশ বলছে, বিএনপি-জামায়াতের প্রত্যক্ষ মদদে সরকার পতন করাই ছিল তাণ্ডবের উদ্দেশ্য। ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর বলছেন, এবার সহিংসতাকারীদের বিচার না হলে জনমনে বিরূপ ধারণা সৃষ্টি হবে।
২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন, গুলিস্তান, বিজয়নগর এলাকা। শাপলা চত্বরের এ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্তত ৭টি জেলায়।
হেফাজতের তাণ্ডবের ঘটনায় ঢাকা ও ঢাকার বাইরে ৮৩টি মামলা হয়। এসব মামলায় সংগঠনটির শীর্ষ নেতা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ আসামি করা হয় ৩ হাজার ৪১৬ জনকে। অজ্ঞাতনামা আসামির সংখ্যা ৮৪ হাজার ৭৯৬ জন।
গত ৮ বছরে এসব মামলায় গতি না পেলেও হেফাজতের মার্চের সহিংসতার পর তদন্ত এগোচ্ছে জোরেশোরে। সংগঠনটির দুই ডজনেরও বেশি নেতা গ্রেফতার হওয়ায় নতুন ও পুরনো মামলায় ফিরেছে গতি।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে ৫ মে নিয়ে মিলছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। পুলিশ বলছে, বিএনপি-জামায়াতের ইন্ধনে সরকার পতনই ছিল ৫ মের তাণ্ডবের উদ্দেশ্যে। দ্রুত এসব মামলার চার্জশিট দেয়ার কথাও জানায় পুলিশ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, এই মামলাগুলোর তদন্তে একটা বিষয়ে আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে তৎকালীন হেফাজতের কর্মকাণ্ড ছিল মূলত সরকার পতনের জন্য। সেই সরকার পতনের তৎকালীন বিএনপি-জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা আমরা সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়ে পেয়েছি।
ঢাকা মহনগর পাবলিক প্রসিকিউটর বলছেন, এবার আসামিদের কোনোভাবেই ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।
ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু বলেন, যাদের বিরুদ্ধে আলাদাভাবে মামলা আছে আর যারা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে তাদের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট দেয়া হয়েছে। তারা অপরাধী তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তা না হলে মানুষের মনে প্রশ্ন থেকে যাবে। তাই কাউকে ছাড় দেয়া যাবে না।
৫ মে তাণ্ডবের মামলায় হেফাজত আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর জামিন বাতিল এবং সাম্প্রতিক সহিংসতার মামলায় তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে আরও সক্রিয় হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
Leave a Reply