পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নে চাঁদাবাজির অভিযোগে মো. সোহেল মোল্লা (২৭), রুবেল সিকদার ওরফে শাকিল (২৮), মো. আরিফ ফকির (২৬) নামে তিন যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। শনিবার রাতে ওই ইউনিয়নের বিজন রায় নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন।
জানা গেছে, গত বছরের ২৫ নভেম্বর রাতে আসামীরা মামলার বাদী বিজন রায়ের ছেলেকে জিম্মি করে তার কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বিজন ছেলের প্রাণ রক্ষায় আসামীদের চাহিদানুযায়ী ওই চাঁদা দিয়েছেন।
আসামী সোহেল গুয়ারেখা ইউনিয়ের আব্দুল হাই মোল্লা, রুবেল সিকদার ওরফে শাকিল কুদ্দুস সিকদার এবং আরিফ ফকির ওই ইউনিয়নের পাটিকেল বাড়ী গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামী সোহেল মোল্লা, রুবেল সিকদার ওরফে শাকিল, মো. আরিফ ফকির গুয়ারেখা ইউনিয়নের চাঁদাবাজ বলে পরিচিত। তারা এলাকায় নিরহ সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি সহ নানা অপকর্ম করে বেড়াত। গত ৫ আগষ্টের পর থেকে ওই তিন যুবক এলাকায় বিস্তর অপরাধ করে বেড়ানো শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৫ নভেম্বর রাতে মামলার বাদী বিজনের ছেলে জয় রায়ের সাথে একটি মেয়ের সর্ম্পকের সূত্র ধরে ছেলেকে আটকে রেখে দেড় লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। প্রথমে চঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আসামীরা বিজনের ছেলেকে বেধম মারধর করে। পরে ছেলের জীবন বাঁচাতে তাদেরকে ৩০ হাজার টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনেন। এ ঘটনায় ভয়ে তিনি প্রথমে থানায় মামলা করতে সাহস পাননি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগষ্টের পর থেকে সোহেল মোল্লা, রুবেল মোল্লা ওরফে শাকিল সিকদার, মো. আরিফ ফকির নীরব চাঁদাবাজি শুরু করে। হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে মুখ খুলতো না। অভিযুক্ত চঁদাবাজরা ব্যবসায়ি থেকে শুরু করে এলাকার অবস্থাপন্ন পরিবারের স্কুল ও কলেজ ছাত্রদের সামান্য দোষ ত্রæটি খুঁজে বের করে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের চাঁদা হাতিয়ে নিতো। ওই চাঁদাবাজদের নেতৃত্বে এলাকায় মাদকের রমরমা বানিজ্যও চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মামলার বাদী বিজন রায় বলেন, তার ছেলের সাথে এলাকার একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক আছে। সোহেল, আরিফ, শাকিল সেই অপরাধ ধরে তার ছেলেকে ধরে বেধম মারধর করে। একপর্যায়ে ছেলেকে আটকে রেখে তার কাছে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
বিজন বলেন, তাদের ভয়ে দুই মাসেও থানায় যেতে পারিনি। এলাকায় নেছারাবাদ থানার ওপেন হাউস-ডে অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার এসেছিল। সেই অনুষ্ঠানে বসে সাহস করে তাদের কথা বলেছি। পুলিশ সুপার সাহেবের নির্দেশে ওসি সাহেব মামলা নিয়েছেন।
নেছারাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বনি আমিন জানান, মাদক, সন্ত্রাস, ইভটিজিং চাঁদাবাজির ব্যাপারে কাউকে কোন ছাড় নয়। ওই ব্যক্তি অভিযোগ দেয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক রয়েছে।
Leave a Reply