উইমেন ডেস্ক : কুষ্টিয়ায় চাঞ্চল্যকর ইজিবাইক চালক সুজন সিকদার খুনের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আসাদ গ্রেফতার রাকিবুল ইসলাম ওরফে আসাদ র্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। শনিবার (২২ অক্টোবর) রাত ১১টায় ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-১২ সিপিসি-১। গ্রেফতার আসামী কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর দত্তপাড়া এলাকার খন্দকার ইউনুস আলীর ছেলে। বিষয়টি আজ রোববার (২৩ অক্টোবর) র্যাব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নিশ্চিত করেছে।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ ২০১৬ তারিখ দুপুরে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতি এলাকার ইজিবাইক চালক সুজন সিকদার (২৮) ভাড়ায় যাত্রী বহনের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরদিন ২৯ মার্চ ২০১৬ তারিখ সকালে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার সাতবাড়িয়া এলাকার একটি লিচু বাগান থেকে সুজনের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে ভেড়ামারা থানা পুলিশ। ইজিবাইক ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে উক্ত হত্যাকান্ড ঘটে বলে জানা যায়।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে নিহতের ভাই বাদী হয়ে একই দিন ভেড়ামারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাহার মামলা নং- ১৪, তারিখ- ২৯/০৩/২০১৬, ধারা ৩০২/৩৭৯/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০, জিআর নং-৪৯/২০১৬। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৩ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচারকার্য শেষে গত ৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখ কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ এর বিচারক গ্রেফতারকৃত আসামি রাকিবুল ইসলাম ওরফে আসাদ (৩৬), পিতা-খন্দকার ইউনুস আলী, সাং-আলামপুর দত্তপাড়া, থানা-কুষ্টিয়া সদর’কে মৃত্যুদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং বাকি দুই আসামি শরিফুল ইসলাম শরিফ, পিতা-আমজাদ হোসেন, সাং-কয়ারগাছি এবং রাজু মোল্লা পিতা-গনি মোল্লা, সাং-বড়খড়িখালি, উভয় থানা-ঝিনাইদহ সদর’কে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও প্রত্যেককে ২০,০০০/- টাকা জরিমানা করে রায় ঘোষণা করেন। পলাতক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল ইসলাম ওরফে আসাদকে গ্রেফতারের ব্যাপারে র্যাব উদ্যোগী হয়ে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্প, র্যাব-১২ এর অভিযানে শনিবার (২২ অক্টোবর) রাত ১১টায় ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার বিরুলিয়া এলাকা হতে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি রাকিবুল ইসলাম ওরফে আসাদ (৩৬), পিতা-খন্দকার ইউনুস আলী, সাং-আলামপুর দত্তপাড়া, থানা-কুষ্টিয়া সদর’কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত রাকিবুল ইসলাম আসাদ উক্ত হত্যা মামলায় আটকের পর প্রায় দেড় বছর জেল খাটে। এরপর জামিনে মুক্তি পেয়ে সে সাভার উপজেলার বিরুলিয়া এলাকায় আত্মগোপনে চলে যায়। সেখানে সে রাজমিস্ত্রীর সহকারী, বালু ঘাটের পাহাড়াদার এবং সর্বশেষ কোমল পানীয় কোম্পানির ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতো। সেখানে থাকা অবস্থায় সে দুটি বিয়ে করে। দ্বিতীয় স্ত্রীর দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় সে প্রায় ১৩ মাস জেল খাটে। রাকিবুল ইসলাম ওরফে আসাদ এর বিরুদ্ধে ১টি হত্যা মামলা, ১টি অস্ত্র মামলা ও ২টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে আদালতে প্রেরণ করতঃ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
Leave a Reply