উইমেন ডেস্ক:কুষ্টিয়া করোনার কারণে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় ২০২০ সালের পরে টানা দুই বছর কুষ্টিয়ায় ছেঁউড়িয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের আখড়াবাড়িতে লালন স্মরণোৎসব ও লালন তিরোধান দিবসে সব উৎসব বন্ধ ছিলো।মহামারির সংকট কাটিয়ে আবারও বসছে দোলপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে লালন স্মরণোৎসব। এবারে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তিন দিনের লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছেন লালন একাডেমি।মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের এই আধ্যাত্মিক বাণীর স্লোগানে (১৫ মার্চ) থেকে শুরু হয়ে এ উৎসব চলবে বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ) পর্যন্ত।
ছেঁউড়িয়া আখড়াবাড়িতে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের তিন দিনব্যাপী স্মরণোৎসব অনুষ্ঠানের প্রথম দিন (১৫ মার্চ) মঙ্গলবার লালন স্মরণোৎসব উদ্ধোধন করেছেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার এনডিসি ইসমাইল হোসেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন।
প্রধান আলোচক ছিলেন কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ও সাবেক উপ-উপাচার্য ড. শাহিনুর রহমান। আলোচক বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক এ্যাডভোকেট লালিন হক।বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিআইজি খুলনা রেঞ্জ ড. খন্দকার মহিদ উদ্দিন, বিপিএম (বার), কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার খাইরুল আলম, স্থানীয় সরকার কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক (উপসচিব) মৃনাল কান্তি দে, কুষ্টিয়ার বিজ্ঞ জিপি এ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান মাসুদ, কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম মহসিন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কুষ্টিয়া জেলা ইউনিট কমান্ড সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আলহাজ্ব রফিকুল আলম (টুকু), কুষ্টিয়া বিএমএ সাধারণ সম্পাদক ডা: এ. এফ. এম আমিনুল হক রতন, কুষ্টিয়া দিশার নির্বাহী পরিচালক রবিউল ইসলাম।
শুভেচ্ছা বক্তা ছিলেন কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সিরাজুল ইসলাম। স্বাগত বক্তা ছিলেন কুষ্টিয়ার নেজারত ডেপুটি কালেক্টর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সদস্য সচিব এ্যাডহক কমিটি, লালন একাডেমির সবুজ হাসান।
এ অনুষ্ঠান চলবে আগামী ১৭ মার্চ পর্যন্ত। স্মরণোৎসবে আলোচনা সভা, লালন মেলা ও সঙ্গীত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং লালন একাডেমির আয়োজনে এই স্মরণোৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।অনুষ্ঠানকে ঘিরে দুর দুরান্ত থেকে লালন একাডেমির শিল্পী আসছে ও লালন ভক্তরা অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন। আলোচনা শেষে দ্বিতীয় পর্বে লালন মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়েছে লালন সঙ্গীত। এতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পীবৃন্দসহ লালন একাডেমীর শিল্পিরা।
বক্তারা বলেন ‘সাঁইজির যে দর্শন ও তার গভীরতা, সাঁইজিকে লালন করার যে মনোবাসনা শুধু বাংলা ভাষাভাষী নয়, সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে আজ তা ব্যাপক একটি বিষয়।
উল্লেখ্য, বাংলা ১২৯৭ সালের ১ কার্তিক প্রয়াণ হয় বাউল সম্রাট লালন শাহের। এরপর থেকেই কালিগঙ্গা নদীর তীরে পালিত হয়ে আসছে লালন স্মরণোৎসব। অনুষ্ঠানকে ঘিরে প্রতিবছর লালনের আখড়া বাড়ি কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় সমাগম হয় হাজার হাজার মানুষের। এ উৎসবকে ঘিরে দেশ-বিদেশ থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে আসেন লালনের আখড়ায়। কয়েক দিন আগ থেকেই লালন ভক্ত ও বাউলরা আখড়াবাড়িতে হাজির হন।
Leave a Reply