মহামারি করোনা ভাইরাসের আরেকটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। বি.১.৫২৫ নামের এই ভ্যারিয়েন্টটি গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যে এটি প্রথমবারের মতো শনাক্ত হয়। একই মাসে ভ্যারিয়েন্টটি নাইজেরিয়াতেও পাওয়া যায়। গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটার (জিআইএসএআইডি) তথ্য অনুসারে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একাধিক গবেষণাগারে এই ভ্যারিয়েন্টের আটটি নমুনা পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের বিজ্ঞানীরা ছয়টি শনাক্ত করেছেন। বাকি দুটির একটি ইনস্টিটিউট ফর ডেভেলপিং সায়েন্স অ্যান্ড হেলথ ইনিশিয়েটিভের এবং একটি শিশু স্বাস্থ্য গবেষণা ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করেছেন। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) এ গবেষণায় যুক্ত বিজ্ঞানীদের একজন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাদের ইউরোপের সহকর্মীরা এখন পর্যন্ত এই ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে যেসব তথ্য দিয়েছেন, তা কিছুটা উদ্বেগজনক। তবে, এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর সময় আসেনি।’
গত ৮ থেকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সে করে নতুন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়ার ওই ফলাফল জিআইএসএআইডির ডাটাবেজে প্রকাশ করা হয়েছে।এর আগে, বাংলাদেশে বি.১.৩৫১ বা ৫০১.ভি২ নামে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। এ ছাড়াও, গত জানুয়ারিতে বি.১.১.৭ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাজ্যের আরেকটি ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়। বি.১.৫২৫ নামের নতুন ভ্যারিয়েন্টটি এখন পর্যন্ত ডেনমার্ক, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াসহ ২৪টি দেশে পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এটিরও বেশ কয়েকটি মিউটেশন হয়েছে। এর মধ্যে একটির নাম ই৪৮৪কে।
এদিকে এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানান, এই মিউটেশনটি দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলের ভ্যারিয়েন্টেও পাওয়া গেছে। এটি অ্যান্টিবডিকে ফাঁকি দিতে ভাইরাসকে সাহায্য করে বলে ধারণা করছেন তারা। এ ছাড়া, যুক্তরাজ্যের শনাক্ত হওয়া অতিমাত্রায় সংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট বি.১.১.৭’র সঙ্গে নতুন বি.১.৫২৫ ভ্যারিয়েন্টের সাদৃশ্য আছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) মহামারি সংক্রান্ত সর্বশেষ আপডেটে এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।এদিকে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন আরও ৮৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৮৬৯ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৬২৯ জন। এতে দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৩৯ হাজার ৭০৩ জনে।
করোনাভাইরাস নিয়ে শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এদিন সুস্থ হয়েছেন আরও ৫ হাজার ২২৫ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৪৭ হাজার ৬৭৪ জন।এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) করোনায় ৯৮ জন মারা যান ও নতুন করে ৪ হাজার ১৪ জন করোনা আক্রান্ত হন।
Leave a Reply