মাত্র দুই হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছিল নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া ২ দিনের শিশুপুত্র। সেটি আবার কিনেছেন অন্তঃসত্ত্বা এক নারী। গর্ভের তৃতীয় সন্তানটিও কন্যাশিশু হওয়ায় সমাজের মানুষের বাঁকা কথার ভয়ে এহেন কাণ্ড ঘটান তিনি। এক সিএনজি চালকের সহায়তায় চুরি যাওয়ার ১৪ ঘণ্টা পর শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর বেরিয়ে আসে এই ঘটনা।
সোমবার (১০ মে) দুপুরে নরসিংদী মডেল থানায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ রাসেল শেখ।
পুলিশ জানায়, নরসিংদী সদর হাসপাতাল থেকে নবজাতকটি চুরি যাওয়ার পরই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে শিশুটিকে খোঁজার কাজ শুরু করে পুলিশ। এরমধ্যে, পুলিশের কাছে খবর আসে এক সিএনজি চালক নরসিংদী সদর হাসপাতালের গেটের সামনে থেকে অজ্ঞাতনামা এক মহিলাকে শিশুসহ ব্রাহ্মন্দী এলাকার একটি বাসায় নামিয়ে দিয়ে এসেছে। এরপর সিএনজি চালককে নিয়ে রাত ১ টার দিকে ঐ মহিলার বাড়িতে অভিযান চালায় পুলিশ।
সেখানে লিপিকা নামে অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার কাছে শিশুটিকে পাওয়া যায়। মহিলার ভাষ্যমতে, তার আরও দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। এবারের গর্ভের সন্তানটিও মেয়ে। তাই সমাজের মানুষের ভয়ে তিনি একটি ছেলে সন্তান যোগাড় করতে চেয়েছিলেন। তারপর তার কথা হয় অজ্ঞাতনামা ঐ মহিলার সাথে। ঐ মহিলা তাকে একটি পুত্র সন্তান এনে দেয়ার আশ্বাস দেয়।
সবশেষ, রোববার দুপুরে অজ্ঞাতনামা ঐ মহিলা শিশুটিকে নিয়ে লিপিকার বাসায় হাজির হন। ২ হাজার টাকার বিনিময়ে শিশুটিকে লিপিকার কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। তারপর তার বাসা থেকে চলে যান অজ্ঞাতনামা মহিলাটি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, এই উদ্ধারকাজ অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং ছিল। যার কাছ থেকে শিশুটিকে পাওয়া গেছে তিনি অন্তঃসত্ত্বা এবং যিনি চুরি করেছেন তাকে আমরা এখন পর্যন্ত খুঁজে পাইনি।
মানবিক দিক বিবেচনায় অন্তঃসত্ত্বা মহিলাটিকে আমরা গ্রেফতার করিনি। অজ্ঞাতনামা মহিলাকে ধরতে পুলিশ কাজ করছে, এটার সাথে আরও কোনো চক্রের যোগসাজস আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে, শিশুটিকে ফিরে পেয়ে হাসি ফুটেছে নবজাতকের মা ও তার পরিবারের মাঝে। তারা সিএনজি চালক এবং পুলিশের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তাদের প্রত্যাশা, অন্য কোনো পরিবারের সাথে যেন এমন ঘটনা না ঘটে।
Leave a Reply