উইমেন ডেস্ক।।বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা, বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর, সদস্যদের মারধর, মদ্যপ অবস্থায় অকথ্য গালমন্দ, নারী সাংবাদিকদের লাঞ্ছিত ও হুমকির ঘটনায় পল্টন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে হামলার ঘটনায় আহত বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাইনুল হাসান বাদী হয়ে পল্টন থানায় এ অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে রাক্ষুসে সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমনসহ ১৫/২০ জনকে আসামী করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভা চলাকালে রাক্ষুসে সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমন, সরকার জামাল, আহমেদ, গীটার বাবু, গোপীবাগের জামানসহ ১৫/২০ জনের একদল ভাড়াটে সন্ত্রাসী পুরানাপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।
এতে সংগঠনের জাতীয় পরিষদের নেতা মাইনুল হাসান, আবুল খায়ের খান, রফিকুল ইসলাম মিরপুরী, মুজাহিদ ও নারী সাংবাদিক আসমা আক্তারসহ কয়েকজন সংবাদকর্মী আহত হন।
সন্ত্রাসী কায়দায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি ভাংচুর , টেলিফোন ভাংচুর, অফিসের আলমারী খুলে ফাইলপত্র ও নগদ ৭ হাজার টাকা চুরি করে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে প্রায় আধাঘন্টা ভাঙচুর চালিয়ে ভীতি প্রদর্শন করে সাধারণ সভা পন্ডের চেষ্টা চালালে সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় জরুরী পরিষেবা ৯৯৯ -এ ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাওয়া হয়। তাৎক্ষনিক পুলিশের এসআই আশরাফের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এসময় সাঈদুর রহমানের নেতৃত্বে সাংবাদিক নয় এমন ভাড়াটে ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আবু জাফরকে গুম করার চেষ্টা চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অবশেষে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে বুধবার (২৬ জানুয়ারী) দুপুরে পল্টন থানার উপ পরিদর্শক বিপুল চন্দ্র বলেন, হামলার ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের পুরানাপল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাধারণ সভা চলাকালে সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং মাদকসহ নানা অনৈতিক কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাঈদুর রহমান রিমনকে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১০.১, ১০.২, ১০.৬ , ১০.১০ ধারা, শারমিন সুলতানা মিতুকে ১০.১, ১০.২, ১০.৫, ১০.৬ ও ১০.১০ ধারা, এমএ আকরামকে ১০.১, ১০.২, ১০.৬, ১০.৯ ও ১০.১০ ধারায়, এনামুল কবির সোহেল, রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু ও জুয়েল খন্দকারের বিরুদ্ধে অনুরুপ অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় সদস্যপদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে শহীদুল ইসলাম পাইলটের বিরুদ্ধে নৈতিক চরিত্র স্খলন, সদস্যদের উস্কানী ছাড়াও গঠনতন্ত্রের ১০.১, ১০.৩, ১০.৪ ধারার অপরাধ সার্বিক পর্যবেক্ষনে প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হওয়ায় অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও জাতীয় পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী আহমেদ আবু জাফর সহ দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা।
তারা বলেন, আজ থেকে আগামীতে বিতর্কে জড়ানো উল্লেখিত ব্যক্তিরা বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেউ নয়। সাংবাদিকদের স্বার্থে কাজ করে যাওয়া এই সংগঠনের নাম পরিচয় পদবী ব্যবহার করা থেকে তাদের বিরত থাকার জন্য বলা হয়েছে। এর পরেও যদি সংগঠনের নাম পরিচয়, পদবী ব্যবহার করে কোনরুপ কর্মকান্ড পরিচালনা করেন এবং সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কাজ কিংবা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয় তাহলে সংশ্লিষ্ট সকলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য; বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামকে ধ্বংসের পাঁয়তারা চালাচ্ছিল কয়েকজন। এর মধ্যেই ওই কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে সংগঠনের ৭ জন ব্যক্তি নানারুপ বিতর্ক সৃষ্টি করে আসছিল। বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে সংগঠনের কাজে মনোযোগী হতে বলে হয়। উল্টো সংগঠন বিরোধী কর্মকান্ড অব্যাহত রাখে তাই সংগঠনের ১২.৩ ধারা মোতাবেক তাদের অব্যাহতি দিয়ে পুনরায় ১৩১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় পরিষদ গঠন করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে হামলা,লুটপাট ও বঙ্গবন্ধুর ছবি ভাংচুর করে অবমাননার দায়ে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সংগঠনের ময়মনসিংহ, কক্সবাজার, কুমিল্লা, বরিশাল, গাজীপুর, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, নরসিংদী শাখাসহ তৃণমূলের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।
Leave a Reply