উইমেন ডেস্ক: রোববার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১ আশ্বিন ১৪২৮ |
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট থেকে একে একে বেরিয়ে যাচ্ছে ইসলামী দলগুলো। সর্বশেষ বিএনপি জোট ছাড়ে কওমি আলেমদের পুরনো দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ। এর আগে মুফতি ফজলুল হক আমিনীর দল ইসলামী ঐক্যজোট ২০১৬ সালে বিএনপি জোট ছেড়ে যায়। আর শায়খুল হাদিসের দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস জোট ছাড়ে তারও অনেক আগে। বর্তমানে বিএনপি জোটে নিবন্ধিত একমাত্র ইসলামী দল মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাকের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস।
দলের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে সহিংসতার মামলায় এখন কারাবন্দী। তাকে মুক্ত করতে দলের কেউ কেউ বিএনপি জোট ছাড়ার কথা ভাবছেন। কারণ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বিএনপির জোট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়ার পর দলটির নেতারা মুক্তি পান।
জানতে চাইলে বিএনপি? স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপির নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে দলগুলো চলে যাচ্ছে ব্যাপারটা এমন নয়। সবচেয়ে বড় কারণ সরকারের পক্ষ থেকে দলগুলোর প্রতি চাপ। এ ছাড়া দলগুলোর মধ্যে বিরোধ রয়েছে। একটি অংশ চলে গেলেও আরেকটি অংশ আমাদের সঙ্গে রয়েছে।
তিনি বলেন, ইসলামী দলগুলোর নেতারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মসজিদের ইমাম কিংবা মাদরাসার শিক্ষক। তারা তাদের প্রফেশন ধরে রাখার জন্য অনেক সময় বাধ্যও হন এমন সিদ্ধান্ত নিতে। জানা যায়, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে ইসলামী মূল্যবোধ রাজনীতিতে অনেকটা এককভাবে ব্যবহার করত এবং এর সুবিধা পেত বিএনপি। বর্তমানে এখন সে পরিস্থিতি নেই। বিশেষ করে দীর্ঘ সময় বিএনপি ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে এবং বিএনপির জোটসঙ্গী হিসেবে হামলা মামলা থেকে দূরে থাকতেই বিএনপির সঙ্গ ত্যাগ করছে ইসলামী দলগুলো।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মহলে তৈরি হওয়া নেতিবাচক ধারণা কাটাতে বিএনপি কয়েক বছর ধরে ইসলামপন্থিদের সঙ্গে এক ধরনের দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করছে। জোটের রাজনীতিতে ইসলামী দলগুলোকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা হচ্ছে না এমন অভিযোগও রয়েছে। ফলে ইসলামী দলগুলোর অনেকে বিএনপি জোট থেকে সরে যায়। তবে ২০-দলীয় জোটে যারা রয়েছে তারা দলগুলোর খন্ডিত অংশ।
অন্যদিকে জোট ছাড়ার পর সব দলই অবহেলার অভিযোগ তুলে বিএনপিকে দোষারোপ করছে। বিএনপি থেকে ছেড়ে যাওয়া দলগুলোর সঙ্গে সরকারের সখ্য বাড়ছে। দলগুলোর নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকার কওমি মাদরাসা শিক্ষার সনদের স্বীকৃতি দিয়েছে। আলেমদের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়িয়েছে। এমনকি পবিত্র কাবা শরিফের ইমামকেও তারা দেশে এনেছে। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির চর্চার পাশাপাশি ধর্মীয় অনুভূতিকেও আওয়ামী লীগ ভালোভাবে ব্যবহার করছে।
এদিকে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন নেই। বর্তমানে বিএনপির সম্পর্ক এখন ততটা সাবলীল নয়। বিএনপির পক্ষ থেকে জামায়াতকে ছাড়ার জন্য দলে চাপ রয়েছে। তবে জামায়াত নেতারা মনে করছেন, বিএনপি তাদের জোট থেকে বের করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেবে না।
Leave a Reply