পিরোজপুর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছরোয়ার হোসেন হাওলাদারের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গ্রামভিত্তিক করোনা ভাইরাসের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মাঝে মোবাইলের মাধ্যমে নগদ ২৫০০ টাকা বিতরনের তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরোয়ার হোসেন হাওলাদার অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। তিনি যে তালিকা তৈরি করেছেন সেখানে তিনি তার ইচ্ছামত লোকের নাম দিয়েছেন। যারা এলাকার অবস্থাশালী লোক এবং একই পরিবারের একাধিক সদস্য রয়েছে সেই তালিকায়। সেখানে যে মোবাইল নম্বর গুলো ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো সঠিক নয় এবং নামের তালিকার লোকদের নয়। যার কারণে যাদের পাবার কথা তারাই এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। এর আগেও মৎস্য কার্ড বিতরনের তালিকার ক্ষেত্রেও যারা প্রকৃত জেলে তারা তালিকা থেকে বাদ পড়েছে অথচ যারা জানেন না তাদের নামের তালিকা দেওয়া হয়েছে।
তালিকায় রয়েছে চাকরিজীবী ও স্বচ্ছল পরিবারের সদস্যদের নাম। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী খেটে খাওয়া দিন মজুরদের নাম তালিকাভুক্ত হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
পরিবারগুলোকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। ওই টাকা মূলত মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে দেওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিকাশ, রকেট, নগদ এবং শিওরক্যাশ। অর্থাৎ নগদ সহায়তা হলেও কাউকে নগদে টাকা দেওয়া হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, যাদের নাম দেয়া হয়েছে তাদেও বেশিরভাগই কাউন্সিলরের লোক। এবং এই কাউন্সিলর পিরোজপুর জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তিনি পরিকল্পিতভাবে এই কাজ করেছেন যাতে সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুন্ন হয়। এই উপকারভোগী বাছাইয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও নিজের খেয়াল খুশিমতো তালিকা তৈরি করেছেন যার কারণে আমরা বঞ্চিত হয়েছি।
এলাকার এক দিনমজুর বলেন, মেরা গরিব, মোরা ওয়া পামু ক্যা?? ওয়া তো পাবে বড়লোকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার এক ব্যক্তি জানান, কাউন্সিলর ওনার ইচ্ছামত তালিকা করছে এগুলো ভোট কেনার জন্যই করছে দিছে সব যারা পাবে না তাদেরকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক নেতা জানান, সাধারণ গরিব মানুষ তালিকা নাই বললেই চলে। মোবাইল নাম্বার দেওয়া হয়েছে সব ভুল যাদের নামের তালিকা হয়েছে তাদের সাথে মোবাইল নাম্বারের কোন মিল নাই।
এ ব্যাপারে পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছরোয়ার হোসেন হাওলাদারের সাথে কথা বললে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার কাছে মানুষ সাহায্যের জন্য আসলে আমি তাদের ভোটার আইডি কার্ড এর ফটোকপি ও নাম্বার মোবাইল নাম্বার নিয়ে তালিকা করে প্রস্তাবিত তালিকা পৌরসভায় দিয়েছি। পৌরসভা থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তালিকা পাঠানোর পরে তারা যা তা যাচাই-বাছাই করে সেই তালিকা অনুযায়ী টাকা প্রদান করবে।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আল এমরান খাঁন জানান, আমরা কাউন্সিলরদের মাধ্যমে প্রতিটি এলাকার তালিকা সংগ্রহ করেছি। অভিযোগের বিষয়টি আমরা দেখছি। অভিযোগের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকলে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply