উইমেন ডেস্ক : দেশে আবার লাশ নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় রাজধানীর পূবালী ব্যাংক অডিটোরিয়ামে পূবালী ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি নেতারা বলছেন- নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে কিন্তু পোস্টমর্টেম রিপোর্টে দেখা গেছে তার শরীরে গুলির চিহ্ন নেই। বরং তার শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন আছে। এঘটনা নতুন করে সন্দেহের তৈরি করেছে।
এসময় তিনি নারায়ণগঞ্জে যুবদল কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনা দেশকে অস্থিতিশীল করতে কোনো আত্মঘাতী কর্মকাণ্ড কি-না এমন প্রশ্ন রেখে এঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের জন্য প্রশাসনকে আহবান জানান।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বাধা না দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিষেধ করছেন। জনগণ আতঙ্কিত হয় আপনারা (বিএনপি) এমন কাজ করবেন। আন্দোলনের নামে হাতে লোহার রড নিয়ে তান্ডব করবেন এসব বরদাশত করা হবে না। কারণ জানমালে নিরাপত্তা দেয়াও সরকারের দায়িত্ব।
সহিংসতা করলে পাপের শাস্তি ভোগ করতে হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, তারেক রহমান লন্ডনে বসে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ বিনষ্ট করতে চাচ্ছে। এগুলো করে পাওয়া যাবে না। দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও হত্যার দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক তারেক পালিয়ে থেকে রেহাই পাবে না। দেশে যখনই আসবে তাকে শাস্তি পেতে হবে।
হানিফ বলেন, বেগম খালেদা জিয়া পাপের শাস্তি পাচ্ছেন। পাপ বাপকেও ছাড়ে না। আল্লাহ বলেছেন, পাপ করলে ইহকাল ও পরকালে শাস্তি ভোগ করতে হয়। আর তার বড় প্রমাণ খালেদা জিয়া। উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনি কেন জেলখানায় থাকবেন? ক্ষমতায় থাকতে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছেন। উনার নির্দেশে নিরীহ, নিরপরাধ মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। গ্যাটকো-নাইকো মামলায় অনেক তথ্য প্রমাণ আছে। আমি জানি না উনার বাকি জীবন কোথায় কাটবে?
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে আজ বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো দেশ হতে পারতো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারীরা জনগণের ভাগ্যের কথা চিন্তা করেনি। তারা নিজেদের ভোগ বিলাসের চিন্তায় ছিলো। দূভার্গ্য আমাদের দেশের কিছু মানুষ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের চক্রান্ত বাস্তবায়ন করেছে। আর এর নেপথ্যে ছিলো জিয়াউর রহমান।
বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছেন এমন ইতিহাস নেই উল্লেখ করে হানিফ বলেন, জিয়া পাকিস্তানের আদর্শকে মনেপ্রাণে ধারণ করতেন। তার সকল শ্রদ্ধা, টান ও ভালোবাসা ছিলো পাকিস্তানের জন্য। তিনি পাকিস্তানের এজেন্ট হিসেবে যুদ্ধে গিয়েছিলেন তা তার কর্মকাণ্ডে প্রমাণ হয়।
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, গত ১৩ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বে নতুন পরিচিতি লাভ করেছে। যে দেশ একসময় ব্যর্থ রাষ্ট্র, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের দেশ হিসেবে চিহ্নিত ছিলো সেই দেশকে নতুন পরিচয় এনে দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। দূরদৃষ্টিসম্পন্ন শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকায় এটি সম্ভব হয়েছে।
দেশের দুই কেটি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য শেখ হাসিনা কাজ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০৩০ সালের আগে ৩০ হাজর মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনায় কাজ করছেন। সাড়ে ১৬ কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছেন। ১০০টি অথনৈতিক অঞ্চল তৈরির মাধ্যমে শিল্প খাতে জাগরণ সৃষ্টি করছেন। মিরসরাইয়ে ৩৫ হাজার একরে জমি নিয়ে শিল্প পার্ক হয়েছে। এতে এক কোটি যুবকের কর্মসংস্থান হবে। ২ কোটি মানুষের কর্মসংস্থান ও ১৫০ বিলিয়ন ডলার রফতানির টার্গেট নিয়ে এসব করা হচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াতের সৃষ্টি একই জায়গায় উল্লেখ করে হানিফ বলেন, পাকিস্তানের মাওলানা মওদুদী জামায়াত সৃষ্টি করেছেন। আর বিএনপি পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের তৈরি। এ দুটি দল দেশের উন্নয়ন চায় না। পাকিস্তানের এ দুই সন্তান বাংলাদেশ স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ হিসেবে থাকুক তা চায় না। তারা পাকিস্তানের আদর্শ ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছে।
বিএনপি কার স্বার্থে সরকারের পতন চায়? এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনারা কার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনা করবেন তা আগে পরিস্কার করুন।
পূবালী ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ) সভাপতি মোহাম্মদ ছানাউল হক এর সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ।
Leave a Reply