উইমেন ডেস্ক : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব শত্রুতা ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন (৫৫) গুরুতর আহত হয়েছেন।

রোববার (২৮ আগস্ট) রাত ১০টার কিছুক্ষণ আগে দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের লালনগর গ্রামের বিলপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আহত হেলাল উদ্দিন আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি লালনগর পূর্বপাড়ার মৃত মজিবর রহমান মাস্টারের ছেলে। ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ১০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত তিনি।

এ বিষয়ে আড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আসাদুল ইসলাম বলেন, আগামী ৪ অক্টোবর লালনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন। বর্তমান চেয়ারম্যান হেলাল ও সাবেক চেয়ারম্যান সাঈদ আনছারী বিপ্লব সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এছাড়াও তাদের মধ্যে ইউপি নির্বাচনের সময় থেকেই ঝামেলা চলে আসছে। আধিপত্য বিস্তার, পূর্ব শত্রুতা ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে বিপ্লব চেয়ারম্যানের লোকজন হেলাল চেয়ারম্যানের ওপর হামলা করে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে।

এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুল ইসলাম বলেন, রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নির্বাচনী প্রচারণা শেষ করে কালিদাসপুর বাজার থেকে মোটরসাইকেলের পিছনে বসে হেলাল চেয়ারম্যান তার বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে রাত ১০টার কিছুক্ষণ আগে লালনগর গ্রামের বিলপাড়ায় গতিরোধ করে প্রতিপক্ষের লোকজন ছুরিকাঘাত করে মোটরসাইকেল চালিয়ে পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্দিনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।

এদিকে হেলাল চেয়ারম্যানের ওপর হামলা ও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা। পেটে ছুরিকাঘাত করে আহত করার ঘটনা চরম উদ্বেগজনক। অনতিবিলম্বে এই সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শী ও লালনগর গ্রামের বাসিন্দা সিহাব উদ্দিন বলেন, একটি লাল রঙের মোটরসাইকেলে বিপ্লব চেয়ারম্যানের তিনজন লোক পিছন থেকে এসে হেলাল চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে এবং ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে মুহুর্তেই পালিয়ে যায়।

এবিষয়ে হেলাল চেয়ারম্যানের পরিবারের লোকজন ও স্বজন আমজাদ হোসেন বলেন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন সাঈদ আনসারী বিপ্লব আর স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন হেলাল উদ্দিন। সেই নির্বাচনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয় হেলাল উদ্দিন। এরপর থেকে তারা নানাভাবে হেলালকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে আসছে। পূর্ব শত্রুতা ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে প্রতিপক্ষ বিপ্লবের লোকজন হেলাল চেয়ারম্যানকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করেছে। আমরা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

এবিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাবীদ হাসান বলেন, স্কুল কমিটির নির্বাচনকে ঘিরে আড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ওপর হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাত করে আহত করেছেন প্রতিপক্ষের লোকজন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

এবিষয়ে কথা বলার জন্য আড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সাঈদ আনছারী বিপ্লব ও কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশরাফুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের দ্বায়িত্বরত চিকিৎসকরা বলেন, পেটের ডান পাশে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে, এজন্য শরীরে রক্ত দেয়া হচ্ছে। হেলাল চেয়ারম্যানের চিকিৎসা চলছে।